পার্সোনাল ব্র‍্যান্ডিং নিয়ে আড্ডা পোস্ট

Razib Ahmed

বিষয়ঃ পার্সোনাল ব্র‍্যান্ডিং( personal branding)।
পার্সোনাল ব্র‍্যান্ডিং কী, একজন উদ্যোক্তার জন্য ইহার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা, পার্সোনাল ব্র‍্যান্ডিং ডেভেলপ করার উপায় ও এর মাধ্যমে একজন উদ্যোক্তা কিভাবে এবং কী কী উপকার বা সুবিধা পেতে পারেন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করুন। 
টপিক নিয়ে যার যা মনে আসে তাই দ্বিধাহীনভাবে লিখুন। 
আড্ডা পোস্টে সবাইকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাচ্ছি।

Razib Ahmed S M Mehdi Hassan Biplob Kishore Deb

S M Mehdi Hassan

সবাইকে আজকের আড্ডায় স্বাগতম। 
পার্সোনাল ব্র‍্যান্ডিং কী? 
পার্সোনাল ব্রান্ডিং হচ্ছে কিভাবে একজন উদ্যোক্তা নিজেকে জনসাধারণের সামনে প্রমোট করেন। এই পুরো ব্যাপারটাই একজন উদ্যোক্তার দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, ব্যক্তিত্ব সহ অনেক বিষয়ের উপরে নির্ভর করে। কিভাবে আপনি আপনার নিজের গল্প সবার সামনে তুলে ধরেন? আপনার আচার-ব্যবহার, কথা বলার স্টাইল, এমন কি আপনার চলাফেরা এসবই পার্সোনাল ব্রান্ডিং এর অংশ। 
পার্সোনাল ব্রান্ডিং এর মাধ্যমে একজন উদ্যোক্তা আর সবার থেকে নিজেকে আলাদা করে ফেলে। 

একজন উদ্যোক্তার জন্য ইহার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা?
একজন উদ্যোক্তা সফল পার্সোনাল ব্রান্ডিংয়ের মাধ্যমে সহজে তার পণ্যকে আর বাকি সবার পণ্য থেকে আলাদা ভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম। আমার পণ্য মানে গুণগত মান, উন্নত সেবার নিশ্চয়তা। 
ভোক্তা আপনার পণ্য পছন্দ করলে নানাভাবে আপনার পণ্যের কথা চারিদিকে ছড়িয়ে দেবে। আবার অপছন্দ করলেও ছড়িয়ে দেবে। 

পার্সোনাল ব্র‍্যান্ডিং ডেভেলপ করার উপায়?
পার্সোনাল ব্রান্ডিং একদিনে তৈরি হয় না। এটা অনেক জটিল এবং সময়সাপেক্ষ একটা ব্যাপার। 
নির্দিষ্ট লক্ষ্য তৈরি করে সেটা অর্জন করার জন্যে নিরবিচ্ছন্নভাবে কাজ করতে হবে। আপনি আপনার ব্রান্ডের মাধ্যমে মানুষকে যে মেসেজ দিতে চান সেটা ঠিক করে সেই অনুযায়ী কঠোর পরিশ্রম করতে হবে নিরন্তর 
কোন ধরণের ধান্ধাবাজি ও মিথ্যার আশ্রয় নেয়া চলবে না। কোন ধরণের মেকি আচরণ করা চলবে না। 
নিজের গল্পটা সকলের কাছে সুন্দর করে তুলে ধরতে হবে। 
নিয়মিত হতে হবে, প্রতিদিন কাজ করতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। 
ব্যর্থতা আসবে এবং আপনি ব্যর্থ হবেন কিন্তু সেটা ভেবে ভয় পেলে চলবে না। 
উদ্যোক্তাকে তার কথাবার্তা এবং তার ব্রান্ডের মাধ্যমে মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব আনতে হবে। 
নিজের পণ্য সবসময়ে নিজে ব্যবহার করতে হবে। 

এর মাধ্যমে একজন উদ্যোক্তা কিভাবে এবং কী কী উপকার বা সুবিধা পেতে পারেন 
একজন উদ্যোক্তা যখন সফলভাবে নিজেকে ব্রান্ড হিসেবে উপস্থাপন করতে পারেন তখন সাধারণ মানুষ তার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে অনেক ভালভাবে মূল্যায়ন করেন। 
একজন উদ্যোক্তা যখন এরকম পার্সোনাল ব্রান্ডিং করতে পারেন তখন তিনি সহজে বিশাল সংখ্যক ক্রেতাকে আকৃষ্ট করতে পারেন। তাকে তখন আর কষ্ট করে ক্রেতা তৈরি করতে হয় না। এ ধরণের উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসা অনেক দ্রুত বড় করতে পারেন। 
সফল পার্সোনাল ব্রান্ডিং ধনী ক্রেতা বা ভোক্তা পেতে বিশাল ভূমিকা রাখে। 
সফল পার্সোনাল ব্রান্ডিং করতে পারলে একজন উদ্যোক্তা অনেক উচ্চমূল্যে তার পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে পারেন।


দিলশাদ দিশা

প্রসঙ্গঃ 'পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং'

♦যোগাযোগ♦

★যোগাযোগ শব্দ টির সাথে আমরা সবাই পরিচিত, কিন্ত, ই-কর্মাসে যোগাযোগ যে কতখানি গুরুত্ব বহন করে তা কি আমরা সবাই জানি?? যদি জেনে না থাকি তবে জেনে নিন এখনি। 

★যোগাযোগ হলো প্রতিটি উদ্যেক্তার অন্যতম হাতিয়ার। স্যার, আপুরা যে আমাদের সবসময় গ্রুপে এক্টিভ থাকতে বলেন, লেগে থাকতে বলেন, তার মানে হলো এই, সবসময়ই উনারা আমাদের সকলের সাথে যোগাযোগে থাকতে ইঙ্গিত দেন।

★উদ্যেক্তা কে সবধরনের শ্রেনী/পেশার মানুষের সাথে যোগাযোগে থাকতে হয়, মিশতে হয়, ব্যাপারটি অতটা ও সহজ নয়।

★অনেক উদ্যেক্তা আছেন যারা কাজের ব্যস্ততার দরুন বন্ধু-বান্ধব, কলিগ, স্বজনদের সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দেন, এটা চরম পর্যায়ের বোকামি। সবার সাথে ভালো যোগাযোগে থাকতে পারলে, এবং আপনার কাজ উনাদের নিকট সুন্দর ভাবে তুলে ধরতে পারলে উনারা ই হবেন আমার কাছের কাস্টমার এবং রিপিট কাস্টমার। 

★শুধু তাই নয়, এই পারস্পরিক সম্পর্ক এবং সম্পর্কের জোরে যে যোগাযোগ তা ধীরে ধীরে সামাজিক পর্যায়ে ছড়িয়ে পরবে, কি বিশ্বাস হচ্ছে না?? যেমন ধরুন, 'আমার জামদানী সেট আমার এক বান্ধবীর খুব পছন্দ হলো, সে তার জন্য অর্ডার করলো, সে ঐ সেট টি পরে এক বিয়েতে গেলো, তার কাজিন দের তার পরা জামদানী সেট টি খুব পছন্দ হলে, তারা নিশ্চয়ই জানতে চাইবে এর উৎস কি, আমার বান্ধবী আমার পেইজের লিংক বা আমার সাথে তার কাজিন দের এড করে দিবে' কি হলো তো সামাজিক যোগাযোগ???? ☺

★কাছের মানুষগুলোকে একটু বেশী প্রায়োরিটি দিন, যোগাযোগে থাকুন তাহলে দেখবেন উনারা নিজের অজান্তেই আপনাকে এবং আপনার কাজ কে ব্র্যান্ডেড করে তুলছে।

★সামাজিক মাধ্যেম গুলো তে নিজের কাজের মাধ্যেমে যোগাযোগে থাকুন, নিজের কাজের, পন্যের, এসবের আপডেট দিন ছবির মাধ্যমে, রিভিউয়ের মাধ্যেমে।

★যেকোন অনুষ্ঠান, বিয়ে, জন্মদিনে নিজের পন্যে উপহার হিসেবে দিন, এটা হলো প্রি-কাস্টমার খাতির। 😉 এর মাধ্যমে সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া ও হবে, নিজের কাজ কে ও প্রমোট করা হবে। এক ঢিলে দুই পাখি আর কি! হিহিহি

★সম্ভব হলে যেকোন পত্রিকায়, উদ্যক্তা কলামে, দেশীয় পন্যের কলামে নিজের পন্য এবং কাজের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা জমা দিন। এটা কোন অংশে বুস্টের চেয়ে কম নয়।

★সবশেষে যেকোন আড্ডায়, গল্পে নিজের কাজের বেশী বেশী প্রচারণা করুন, এবং নিজেই নিজের পন্যের মডেল হয়ে যান মাঝে মাঝে।


সিলভিয়া খান

ধন্যবাদ Kamrul Hasan ভাইয়া আপনাকে আজকের আড্ডা পোষ্টে এতো শিক্ষনীয় একটা বিষয় নির্ধারণের জন্।
(বাকি অংশ)
🍂পার্সোনাল ব্রান্ডিং ডেভেলপ করার উপায়:
পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং করার ক্ষেত্রে শুধু নিজের ব্যবসার প্রচার না করে পুরো ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আলোচনা করা উচিত।একটি ব্যবসা হিসেবে নয়, একজন মানুষ হিসেবে নিজের প্রচার করুন। নিজেকে ব্র্যান্ড হিসাবে তৈরি করার সব থেকে গুরুত্ত পূর্ণ একটা প্লান হল প্রত্যেকদিন লেখা। আপনার ভাল লাগা, খারাপ লাগা, আপনার কাজ, প্রতিটা দিন কি ভাবে কাটে। এই গুলা, আপনাকে যারা জানতে চায় তাদের প্রথম আগ্রহের বিষয় থাকে।lমানুষ এখনো কারো জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা পড়তে, শুনতে ভালবাসে।

সুতরাং, নিজেকে প্রমাণ করতে হবে। আর এই নিজেকে প্রমাণ করার বর্তমান সব থেকে ভাল মাধ্যম হল লেখালেখি করা।

🍂পার্সোনাল ব্রান্ডিং ডেভেলপ করার অন্যতম মাধ্যম হলো ভিডিও আপলোড করা ।
একটা ৫০০ ওয়ার্ডের আর্টিকেল = ১ টা পিকচার
১০০ টা পিকচার = ৫ মিনিটের একটা ভিডিও
প্রত্যেকটা ভিডিও শো করবে “আমি আসলে কি? কেন আজকে আমি এতভাল জায়গায়?”

🍂পার্সোনাল ব্রান্ডিং ডেভেলপ করার আরেক অন্যতম মাধ্যম হলো podcast । এর মাধ্যমে ক্রেতা খুব সহজেই আমার বা আমার পন্যের ব্যাপারে জানতে আগ্রহী হয়।

🍂ফেসবুক পোষ্টের মাধ্যমে পার্সোনাল ব্রান্ডিং ডেভেলপ করা সম্ভব । পোষ্টে নিজের ব্যাপারে নিত্য নতুন কিছু আপডেট তুলে ধরার মাধ্যমে ফলোয়াদের নিজের প্রতি আগ্রহী করা সম্ভব ।ফেসবুক মেইলের থেকেও বেশি কার্যকর। কোন কিছু মেইলে দিলে স্প্যামে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কিন্তু ফেসবুকের ক্ষেত্রে সে সম্ভবনা শূন্য ।

🍂সব সময় চেষ্টা করতে হবে প্রফেশনালভাবে সব কিছু চিন্তা করার। তবে, অবশ্যই বিবেক কে বাদ দিয়ে নয়।
ভাবতে শিখতে হবে এবং নিজের ভাবনাকে শেয়ার করতে হবে তাহলে নিজে কখন যে ব্রান্ড হয়ে যাবো টেরই পাবনা ।

🍂নিজের সম্পর্কে কথা বলার অভ্যাস করতে হবে। হতে পারে সেটা কোন সাফল্য, বাঁশ খাওয়া, জীবনের পেছনের কথা,কিংবা পরিশ্রমের কথা, যে কোন কিছু।

🍂এমন ভাবে প্রকাশ করার চেষ্টা করতে হবে যেন দেখে মনে হয় যে এই বর্তমান সাফল্য গত রাতের ঘটে যাওয়া ঘটনা না। এ অবস্থানে আসতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে ।

ফলোয়ার কে বিশ্বাস করাতে শিখতে হবে তারা যদি ইচ্ছা করে তাহলে তারা এর থেকেও ভাল কিছু করতে পারে।

🍂প্রতিদিন লেখার অভ্যাসটা খুবই কাজে দেয় সেটা পার্সোনাল ব্র্যান্ডইং হউক আর বিজনেসর হউক।তবে অবশ্যই গ্রহনযোগ্যতার সাথে লিখতে হবে ।চেষ্টা করতে হবে আর্টিকেল লেখার সময় ভাল গ্রহণযোগ্য সোর্সের কথা বলার জন্য।যত বেশি ভাল মানের সোর্স উল্ল্যেখ করা যাবে লেখা তত বেশি ভাল মানের হবে।

🍂বিশ্বাস করতে শিখতে হবে আমিও নিজেই একটা ব্র্যান্ড। আমার নিজের উপর যদি কোন ভরসা না থাকে তাহলে অন্যকেউ আমাকে কেন বিশ্বাস করবে ?নিজেকে এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যেন একটা বিশ্বাসী ব্র্যান্ড হিসাবে সবাই মনে করে। এমন কোন প্রোডাক্টে কখন রিকমেন্ড করা যাবেনা যা ব্যবহার করে ফলোয়ারদের পশ্চাতে সিলেটি বাঁশ যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

ভক্ত, খুব ভয়ংকর জিনিস। বিশ্বাস না হলে শাহারুখ খানের ফ্যান মুভিটা দেখতে পারেন।

🍂পার্সোনাল ব্রান্ডিং এর সুবিধাসমূহ:
আজকের দিনে যদি ক্যারিয়ারকে সফল ও দীর্ঘমেয়াদী করতে চাই,তবে আত্মপ্রচারের বা পার্সোনাল ব্রান্ডিং এর পেছনে সময় দেয়াটা অবশ্যই একটি কার্যকর বিনিয়োগ। সফল আত্বপ্রচারের ফলে যেমন ব্যবসার প্রসার বাড়বে, তেমনি নতুন নতুন ব্যবসায়ে তাড়াতাড়ি সফল হওয়ার পথও সুগম হবে।


Md. Murshed Alam

পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং: 'প্রচারেই প্রসার' এ কথাটির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। যখন টিভি বা রেডিওতে কোন কোম্পানি বা পণ্যের প্রচার দেখি,তখন সেই পণ্যটির আমাদের কাছে একটা আলাদা আকর্ষণ সৃষ্টি হয়।আর আকর্ষণ সৃষ্টি হওয়াটা হচ্ছে ঐ কোম্পানি বা পণ্যের ব্র্যান্ডিং।
আবার ধরুণ আপনি বাজারে গিয়ে নির্দিষ্ট কোন দোকানদারের কাছ থেকে নির্দিষ্ট কোন পণ্য ক্রয় করেন, যদিও একই পণ্য আরও অনেকেই বিক্রয় করে থাকেন।তাহলে আপনি তার কাছ থেকেই কিনেন কেন?কারণ হলো তার এমন কোন গুণ আপনার ভালো লাগে যা অন্য কোন দোকানীর মাঝে আপনি খোঁজে পাননা। এটাই পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং। অর্থাৎ 
নিজের বুদ্ধিমত্তা,সৃজনশীলতা এবং ব্যক্তিত্বকে কাজে লাগিয়ে অন্যের নিকট নিজেকে গ্রহনযোগ্যতা তৈরি করাই হচ্ছে পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং।

পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং করার কয়েকটি উপায়:
★সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পরিচ্ছন্ন ব্যবহার
★ব্লগিং
★প্রোফেশনাল 

♣ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পরিচ্ছন্ন ব্যবহার : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, টুইটার,ইন্সটাগ্রাম,লি্ংকেডিন ইত্যাদি ব্যবহার করে নিজেকে ব্র্যান্ডিং করা যায়।তবে এক্ষেত্রে আপনাকে কিছু জিনিস অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।আপনার প্রতিটি প্রোফাইলে যেন একই এবং সঠিক তথ্য থাকে।

আর আপনাকে মানুষ তখনি ফলো করবে যখন আপনি তাদের উপকারে আসবেন।এজন্য আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়াগুলো নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয় নিয়ে নিয়মিত কিন্তু বৈচিত্র্যময় কোন কিছু লিখতে হবে।

♦বিভিন্ন গ্রুপে যুক্ত হয়ে নিজেকে উপস্থাপন করা:
আপনি যেই বিষয়ে পারদর্শী বা লেখালেখি করেন সেরকম কিছু গ্রুপে যুক্ত হয়ে আপনার লেখাগুলো পোস্ট করতে পারেন,তাহলে অন্যরা সহজেই আপনাকে চিনতে পারবে।যেমন উই গ্রুপে আমরা আমাদের ব্যবসায়িক বিভিন্ন বিষয়গুলো তুলে ধরি।
♦সবার উপকারে আসে এমন কিছু কাজ করা বা লেখালেখি করা।

♣ নিজের ঘটনাঃ

নিজের সম্পর্কে কথা বলুন। হতে পারে সেটা কোন সাফল্য, ব্যর্থতা, জীবনের পেছনের কথা, আপনার পরিশ্রমের কথা, যে কোন কিছু।

এমন ভাবে প্রকাশ করার চেষ্টা করুণ যেন দেখে মনে হয় যে আপনার এই বর্তমান সাফল্য গত রাতের ঘটে যাওয়া ঘটনা না। আপনাকে অনেক পরিশ্রম করা লাগছে, এখানে আসার জন্য। তবে খেয়াল রাখতে যেন কোন মিথ্যা তথ্য না ব্যবহার করি।

♣ প্রোফেশনাল: সময় চেষ্টা করেন, প্রফেশনাল সব কিছু চিন্তা করার। তবে, অবশ্যই বিবেক কে বাদ দিয়ে নয়। যা আপনি পারবেন না,বা অতিরিক্ত কিছুতে আগ্রহ দেখানো যাবে না।

♣ইউটিউবিং: বর্তমান যুগে ইউটিউব জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যমের মধ্যে অন্যতম। এই মাধ্যমে যদি আমরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো সংক্ষেপে আকর্ষণীয়ভাবে তুলে ধরতে পারেন তাহলে অনেকেই আপনার ফলোয়ার হয়ে যাবেন। ভিডিও গুলো হতে পারে podcast ভিডিও।

♣♣পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং এর উপকারিতা : আমরা যদি একটু ভাবি যে, এ্যাপলের সাথে যদি স্টিভ জবস্ নামটি না তাহলে কি এটি এতো বিখ্যাত কোম্পানি হতো বা কোন সম্পর্ক রাখে?
স্বাভাবিক দৃষ্টিতেই এটা ভাবা স্বাভাবিক যে সম্পর্ক তো আছেই।
হ্যাঁ সম্পর্ক আছে কারণ মানুষ প্রতিষ্ঠানের চেয়ে রক্তমাংসে গড়া মানুষকে বেশি ভালোবাসে।


Biplob Kishore Deb

কমেন্ট-১ 
কলেজে আমাদের বাংলা ক্লাস হতো দিনের শেষ পিরিয়ডে, অর্থাৎ অন্যান্য বিষয়ের পাঁচটি ক্লাস হয়ে যাবার পর ষষ্ঠ বিষয় হিসেবে আমরা বাংলা পড়তাম। খুব স্বাভাবিকভাবে বাংলা ক্লাস শুরু হতে হতে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর এনার্জি ও মনোযোগ একেবারে তলানিতে এসে ঠেকত। বাংলার শিক্ষক তার মতো করে বলে যেতেন, আর শিক্ষার্থীরা তাদের মতো করে কেউ শুনতো, কেউ শুনতো না। যারা শুনতো তারাও ক্লাস শেষ হবার আগেই তা ভুলেও যেত। সবার মনোযোগ থাকতো ফাইনাল বেল কখন পড়বে তার উপর। এভাবে মাস দুই চলার পর হঠাত অন্য সেকশন থেকে বাংলা’র একজন স্যার এলেন আমাদেরকে পড়ানোর জন্য। তিনি আসতেই বাংলা ক্লাসের পুরো পরিবেশ বদলে গেলো, দিনের শুরুতেই সবার আলোচনায় থাকতো ‘আজকে বাংলা ক্লাসে কি পড়ানো হবে’। বাংলা ক্লাসের এই চিত্র পরিবর্তনের পেছনে কারন একটাই, স্যার সাহিত্যকে খুব মজার করে পড়াতেন, লাইন ধরে ধরে শুধু রিডিং না পড়ে তিনি প্রথমে কবিতা বা গল্পের পটভূমিসহ সামগ্রিক ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে বলতেন, তারপর লেখক সম্পর্কে এবং লেখকের অন্যান্য লেখা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করতেন। এরপর তিনি মূল টেক্সটে যেতেন এবং সেখানেও তার পড়ানোর একটা নিজস্ব স্টাইল ছিলো।
বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠার পর সৌভাগ্যবশত আমি প্রথম সেমিস্টারেই রাজিব স্যারের ক্লাস পেয়েছিলাম। সেই ক্লাসে একটা ছেলেকে দেখতাম যে সে অন্য শিক্ষকদের ক্লাসে প্রায় শতভাগ অনুপস্থিত থাকতো, কিন্তু রাজিব স্যারের ক্লাসে তার উপস্থিতি প্রায় শতভাগ।
উপরের উদাহরণ দুটি’র ক্ষেত্রে আমার সেই বাংলা শিক্ষক এবং রাজিব স্যার অন্য শিক্ষকদের চেয়ে কোথায় আলাদা ছিলেন? না, বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান অন্য শিক্ষকদের কোন অংশেও কম ছিলো না। কিন্তু এই জ্ঞান তাঁরা দু’জন কিভাবে শিক্ষার্থীদের কাছে উপস্থাপন করতেন সেখানটায় তাঁরা অন্যদের চেয়ে নিজেদেরকে আলাদা করতে পেরেছিলেন। তাঁদের ব্যক্তিত্বের ক্যারিশমা, দক্ষতা, পড়ানোর স্টাইল, পড়ানোর প্রতি তাঁদের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি, এবং সর্বোপরি শিক্ষার্থী যেভাবে শিক্ষা গ্রহণ করতে চায় সেভাবে শেখানো- এই প্রতিটি বিষয় শিক্ষার্থীদের কাছে তাঁদের একটি আলাদা ইমেজ তৈরি করেছিলো, বা তাঁদের সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের মনে ভিন্ন একটি মনোভাব তৈরি করতে পেরেছিলো।
ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে পার্সোনাল ব্র্যান্ডিংও অনেকটা সেরকমই। এখানে প্রতিষ্ঠান বা পণ্যের চেয়েও অধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেন ব্যক্তি, অর্থাৎ উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ী নিজে। তিনি সার্বিকভাবে নিজেকে কিভাবে কাস্টমারের কাছে উপস্থাপন করছেন সেটাই হয়ে উঠে তার ‘পার্সোনাল ব্র্যান্ড’, আর নিজেকে পরিকল্পনা অনুযায়ী উপস্থাপনের এই পুরো প্রক্রিয়াটিই হলো পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং। 
বিল গেটসের নাম মনে আসতেই আমাদের চোখে ভেসে ওঠে কম্পিউটার, বিশেষ করে মাইক্রোসফটের লোগো। আমাদের দেশের প্রয়াত ভাস্কর নিতুন কুন্ডের কথা উঠলেই সাধারণ মানুষের মনে চমৎকার সব ডিজাইনের ফার্নিচার ভেসে উঠে। আবার স্টিভ জবসের অ্যাপল ছেড়ে যাবার গুজবে শেয়ার বাজারে অ্যাপল প্রতিষ্ঠানের দর পতনও হয়েছে। এঁরা সবাই তাদের প্রতিষ্ঠানকে ছাপিয়ে নিজেরাই হয়ে উঠেছিলেন ‘ব্র্যান্ড’। নিজেদের জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং কাজের প্রতি তাদের নিবেদন, প্রতিশ্রুতি ও ভালোবাসা- এগুলোকে কাজে লাগিয়ে কাস্টমারদের মনে তাঁরা নিজেদেরকে অন্যদের চেয়ে আলাদা করতে পেরেছিলেন।


Biplob Kishore Deb

কমেন্ট-২ 
পার্সোনাল ব্র্যান্ড কিভাবে তৈরি করা যায়?
পার্সোনাল ব্র্যান্ড তৈরি করা, অর্থাৎ নিজেকে কাস্টমারের কাছে বিশেষভাবে উপস্থাপন করা,- এই পুরো প্রক্রিয়াটির মধ্যে বেশ কয়েকটি বিষয় জড়িত। প্রথমত, নিজের ব্যবসা বা পণ্য সম্পর্কে গভীরভাবে জানা, এবং নিজের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে খুব সহজবোধ্য ও সাবলীল ভাষায় কাস্টমারের সাথে (লিখে বা কথায়) শেয়ার করার মাধ্যমে কাস্টমারের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা। 
এখানে উদাহরণ হিসেবে উই’য়ের কাকলি রাসেল তালুকদার আপু’র কথা বলা যেতে পারে। তিনি উই’তে যোগ দেয়ার পর একেবারে প্রতিদিন জামদানি শাড়ি নিয়ে লিখে গেছেন এবং এগুলোর কোনটাই ‘আমারটা ভালো, আমার কাছ থেকে নেন’ এরকম নয়। বরং জামদানি সম্পর্কে তিনি পোস্টের মাধ্যমে মানুষকে জানানোর চেষ্টা করেছেন, আর এভাবে করে জামদানি’র কাস্টমার বা সম্ভাব্য কাস্টমারদের মনে ‘জামদানি এক্সপার্ট’ হিসেবে নিজের একটি ছবি তৈরি করতে পেরেছেন আপু। আমি নিজে একজন ছেলে হয়েও জানি যে জামদানি শাড়ি’কে রোল করে রাখতে হয়, কাট ওয়াশ করাতে হয়, মাস তিনেক পর পর রৌদ্রে দিতে হয়। আমি এগুলো জেনেছি কাকলি আপু’র পোস্ট পড়ে। হ্যাঁ, জামদানি শাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জ্ঞান আমার সরাসরি কাজে আসবে না, কিন্তু আমি এটা জেনে গেছি যে জামাদানি শাড়ি কিনতে হলে আমাকে কার কাছে যেতে হবে, বা কেউ কিনতে চাইলে কাকে রিকমেন্ড করতে হবে।
নিজের পণ্য সম্পর্কে শুধু ভালোভাবেই জানলেই হবে না, বরং অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে সুন্দর করে উপস্থাপনও করতে জানতে হবে। আর এখানেই ‘স্টোরি টেলিং’ দক্ষতার গুরুত্ব নিহিত। এই কাজটি উই’তে অসাধারণভাবে করে চলেছেন সিরাজুম মুনিরা আপু; গল্পের ছলে আবায়া নিয়ে করা আপু’র পোস্টগুলোই তার একটি পার্সোনাল ব্র্যান্ড তৈরি করেছে গ্রুপে, বিশেষ করে আবায়া’র কাস্টমারদের কাছে। মনিকা আপু যেমন আবার তার শাড়িগুলো’র এক একটি সুন্দর নাম দেন এবং এই নামকরণের সূত্র ধরেই গল্পের আকারে শাড়িগুলোকে আকর্ষণীয়ভাবে সচিত্র তার পোস্টে উপস্থাপন করেন। 
পার্সোনাল ব্র্যান্ডিংয়ের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো কাস্টমারের কথা শোনা বা কাস্টমারকে স্টাডি করা। অর্থাৎ কাস্টমারের সাথে অর্থবহ যোগাযোগ স্থাপন। কারন Customer is always the king. কাস্টমারের প্রতিক্রিয়া বা ফিডব্যাকের ভিত্তিতে ব্যবসায়ে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন, পরিবর্ধন তথা সংযোজন-বিয়োজন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মোট কথা, কাস্টমার কি চাচ্ছে সেটা জানা এবং সে অনুযায়ী ডেলিভার করতে পারা। আর এটা করতে পারলেই কাস্টমারের সাথে সম্পর্ক আরো জোরদার হবে এবং কাস্টমার আরো বেশি করে আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে পারবে ক্রেতার উপর। 
কাস্টমার খাতিরও এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্যই স্যার গ্রুপে কাস্টমারকে খাতির করার উপর এতোটা গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। যেমনটা স্যার বলেন যে, কাস্টমার হিসেবে আমরা সবাই সম্মান পেতে চাই, গুরুত্ব পেতে চাই, এবং যাদের কাছ থেকে আমরা সেটা পাই তাদের একটা আলাদা জায়গা তৈরি হয়ে যায় আমাদের মনে। অর্থাৎ সেই ব্যবসায়ী বা উদ্যোক্তা নিজেই একটি ব্র্যান্ড হয়ে উঠেন আমাদের কাছে।


Biplob Kishore Deb

কমেন্ট-৩ 
তৃতীয়ত, উদ্যোক্তাকে নিজের কাজের মাধ্যমেও অন্যদের থেকে আলাদা হতে হবে। অর্থাৎ নিজের কাজের মধ্যে এমন কিছু বিশেষত্ব আনা, বা এমন কোন ‘সিগনেচার প্রোডাক্ট’ নিয়ে আসা যেটা তাকে খুব সহজেই অন্যদের থেকে আলাদা করবে। যেমন উই’তে উম্মে সাহেরা আনিকা আপু’র বাটিকের জুতা বা স্যান্ডেল। আমরা স্যান্ডেল চিনি, আবার বাটিকও চিনি, কিন্তু এই দুটোর সমন্বয়ে যে একটি পণ্য হতে পারে সেটা সম্পর্কে আমাদের প্রথম জানিয়েছেন আনিকা আপু। জামদানি’র গাউনের সাথে যেমন আমাদের পরিচয় করিয়েছেন কাকলি আপু, আবার খেশ শাড়ি ও বাটনা সম্পর্কে আমরা জেনেছি নিাগার ফাতেমা আপু’র কাছ থেকে। গ্রুপে আমসত্ত্ব, আঁচার বিক্রি করেন অনেকেই, কিন্তু জলপাইসত্ত্ব বলতে আমরা চিনি নাদিয়া রওশন আপুকে। একইভাবে উই’তে অনেকেই মেইন ডিশ নিয়ে কাজ করেন এবং সায়মা বেগম আপু তাদেরই একজন। কিন্তু কাস্টমারের মনে আপু নিজেকে আলাদা করেছেন তার মুঠিকাবারের মাধ্যমে। যেমনটা কামরুন্নাহার আপু করতে পেরেছেন তার দইবড়া দিয়ে। আমরা সাধারণত টাঙ্গাইলের চমচম বলতে এবং খেতে অভ্যস্ত, কিন্তু উই গ্রুপে সালমা নেহা আপু’র চমচম টাঙ্গাইলের চমচমকেও মনে হয় জনপ্রিয়তায় অনেকটাই ছাড়িয়ে গেছে। 
এখন সিগনেচার প্রোডাক্ট বলতে সেটা যে সব সময় একেবারে ইউনিক কোন প্রোডাক্টই হতে হবে তেমনটা কিন্তু নয়। বরং কখনও কখনও একটি প্রোডাক্টকে বিশেষভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমেও সেটাতে একটি ‘সিগনেচার টাচ’ দেয়া যায়, ভ্যালু অ্যাড করা যায়। সেটা হতে পারে প্যাকেজিং, ডেলিভারি সিস্টেম বা প্রাসঙ্গিক অন্য কোন কিছু।
যেমন ডিএসবি’তে কিছুদিন আগে স্টার্ট-আপ নিয়ে যখন আলোচনা, পড়াশোনা চলছিলো তখন ভারতের ‘বিরিয়ানি বাই কিলো’ নামের স্টার্ট-আপ নিয়ে স্যার সবাইকে পড়তে বলেছিলেন। ‘বিরিয়ানি বাই কিলো’র মূল বিশেষত্বই হলো তারা অর্ডারকৃত বিরিয়ানি যে হাড়িতে রান্না করে বিশেষ প্রস্তুতি অবলম্বনে সেই হাড়িতে করেই উক্ত বিরিয়ানি কাস্টমারের কাছে পৌছে দেয়। 
এখানে ম্যাকডোনাল্ডস-এর ফাস্টফুড চেইন হিসেবে জনপ্রিয় হবার গল্পটিও যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক। ম্যাকডোনাল্ডস বাজারে বিশেষ কোন নতুন খাবার নিয়ে হাজির হয়নি, তারা শুধুমাত্র ৩০ মিনিটের পরিবর্তে ৩০ সেকেন্ডে খাবার পরিবেশন করতে শুরু করে। সম্প্রতি আবুল খায়ের ভাই ম্যাকডোলান্ডসের উপর নির্মিত চলচ্চিত্র ‘দ্য ফাউন্ডার’-এর রিভিউ লিখতে গিয়ে গ্রুপে নিজের পোস্টে এই বিষয়টির উল্লেখ করেছেন।


Biplob Kishore Deb

কমেন্ট-৪ 
না, ম্যাকডোলান্ডস বা ‘বিরিয়ানি বাই কিলো’ দুটো’র কোনটিই পার্সোনাল ব্র্যান্ডিংয়ের উদাহরণ নয়। কিন্তু তাদের মতো করে ‘সিগনেচার সার্ভিস’ কিন্তু পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং তৈরিতে দারুনভাবে ব্যবহার করা যায়। যেমন উই’তে নাজমুল ফিরোজ ভাই মাছ-মাংস ধুয়ে, কেটে পরিষ্কার করে ডেলিভারি দিয়ে থাকেন। এতে করে কাস্টমারের মূল্যবান সময় ও শ্রম বেঁচে যায়। আবার যেমন স্যার কিছুদিন আগে উই’তে যারা খাবার নিয়ে কাজ করেন তাদেরকে মাটির পাত্রে খাবার ডেলিভারি দেয়ার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে ভেবে দেখতে বলেছেন। একইভাবে যারা ফ্রোজেন ফুড নিয়ে কাজ করেন তারা চাইলে ফ্রোজেন ফুডের সাথে একটি কাগজে সেটির সঠিক প্রস্তুতপ্রণালী লিখে দিতে পারেন যাতে করে কাস্টমার খাবারের স্বাদ ও মান বজায় রেখে খাবারটি তৈরি করে নিতে পারেন। আবার অনেকটা ঐ ‘গরম পানি’তে ট্যাং’ পান করার মতো খুব পরিচিত কোন পণ্যের নতুন কোন ব্যবহারও পণ্যটিকে বিশেষত্ব দিতে পারে। যেমনঃ আজকের দিনে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করার মাঝে সুখানুভূতি লাভের কোন সম্ভাবনা না থাকলেও হাতপাখা দিয়ে ঘর সাজাবার কাজটি কিন্তু করা যেতেই পারে। 
জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের কাজে ‘সিগনেচার টাচ’ দেয়ার মাধ্যমে নিজের একটি পার্সোনাল ব্র্যান্ড তৈরির হাল আমলের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদাহরণ সম্ভবত স্টিভ জবস। তাঁর নেতৃত্বে তৈরি আইপড, আইফোনের মতো পণ্যগুলো বাজারে রীতিমতো নতুন প্রোডাক্ট ক্যাটাগরিই তৈরি করে দিয়েছে। তিনি কাউকে অনুসরণ করেননি, শুধুমাত্র নিজের সৃষ্টিশীলতাকে কাজে লাগিয়ে এমন কিছু করেছেন যেটা আর কেউ করতে পারেনি, অনেকে এমনকি ভাবতেও পারেনি। এভাবে করে ব্যক্তি স্টিভ জবসই হয়ে উঠেন প্রযুক্তির উৎকর্ষতার সমার্থক। আর স্বাভাবিকভাবেই অ্যাপল তাঁর পার্সোনাল ব্র্যান্ডকে কাজে লাগিয়ে মার্কেট ডমিনেট করতে শুরু করে। 
উপরে আলোচিত তিনটি বিষয়- নিজের পণ্য সম্পর্কে জানা, কাস্টমারের সাথে যোগাযোগ, এবং নিজের কাজের মাধ্যমে অন্যদের চেয়ে নিজেকে আলাদা করা – এগুলো প্রতিটিই একজন উদ্যোক্তার পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং তৈরিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত। তবে এই তিনটি বিষয়ের বাস্তব রুপায়ন তখনই সম্ভব যখন একজন উদ্যোক্তা হবেন কাজের প্রতি শতভাগ নিবেদিতপ্রাণ- তিনি নিজের কাজকে যেমন ভালোবাসবেন তেমনি প্রতিনিয়ত চেস্টা করবেন কিভাবে নিজের কাজকে পরবর্তী পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায়। অর্থাৎ নিজের সৃষ্টিশীলতাকে কাজে লাগিয়ে অন্যদের থেকে নিজেকে আলাদা করার প্রচন্ড এক সংকল্প থাকতে হবে উদ্যোক্তার মধ্যে। আর এর পাশাপাশি তিনি মুখে যা বলছেন সেটাকে কাজে পরিণত করার ক্ষেত্রে তিনি কতটা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, অর্থাৎ কাস্টমারের প্রতি তার শতভাগ কমিটমেন্টও থাকতে হবে। একজন উদ্যোক্তার ব্যক্তিত্বে এই বৈশিষ্ট্যগুলো না থাকলে পার্সোনাল ব্র্যান্ডিংয়ে সফল হওয়া অসম্ভব।


Mst Arzumand Any

আড্ডা পোস্ট-২
বিষয়-পার্সোনাল ব্রান্ডিং

পার্সোনাল ব্রান্ডিং বলতে বোঝায় নিজের ব্রান্ড তৈরি করা।নিজেকে সকলের কাছে উপস্হাপন করা আলাদাভাবে।।নিজের জ্ঞানের পরিধি দিয়ে সকলের মাথায় গেথে যাওয়া।নিজেকে এমনভাবে উপস্হাপন করা পরিচিত করানো যাতে আমার সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা পায় সকলে।সকলের মনে আস্হা অর্জন করতে পারা।।নিজেকে অন্যের থেকে আলাদাভাবে উপস্হাপন করা নিজের জ্ঞান,আচরণ,চিন্তাশক্তির দ্বারা।আলাদা একটা আধিপত্য বিস্তার করা।

ই-কমার্স ব্যাবসায় একজন উদ্দোগতার জন্য পার্সোনাল ব্রান্ডিং জাদুর কাঠি হিসেবে কাজ করে।।নিজেকে পরিচিত করাতে হবে এমনভাবে যাতে সকলের মাথায় গেঁথে যায় আমার গুন,ভালো আচরণ,জ্ঞানের পরিধি, বিশ্বস্ততা সবকিছু।আমাকে চিনলে, আমার কাজকেও সবাই খুজে নেবে।।তাই নিজেকে আগে উপস্হাপন করতে হবে সবার নজরে নিজের বেস্ট গুলো তুলে ধরতে হবে।।

নিজের ভালো গুন কাজে লাগাতে হবে,খারাপ দিকগুলো বুঝে তা সমাধান করতে হব,অন্যের ভালো গুনের প্রশংসা করতে হবে,সম্মান করতে হবে।কাউকে হেয় করা যাবেনা,হিংসা থাকা যাবেনা।।সবসময় সুন্দর মনমানষিকতা নিয়ে সকলের সাথে সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করতে হবে।নিজেকে পরিচিত করাতে হবে আলাদাভাবে অন্যের থেকে।। জানতে হবে,অন্যকে জানাতে হবে।।

উদাহরণ হিসেবে আমাদের কাকলি আপু আছেন, নিগার আপু আছেন, জামদানী এবং খেশ শাড়ির কথা আসলেই মাথায় আসে আপুদের নাম।।উনারা তাদের পার্সোনাল ব্রান্ডিং মজবুত করেছেন।।তাই চোখবন্ধ করেই আমরা তাদের স্বরণাপন্ন হই।।ঠিক নিজেকেও এভাবেই সকলের আস্হাভাজন তৈরি করতে হবে।।
সকলের সাথে নিজের জানা বিষয় শেয়ার করতে হবে,জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে হবে,অন্যকে সম্মান করতে হবে।নিজেকে সকলের কাছে পরিচিত করাতে পারলে,সকলের মনে গেঁথে যাওয়াটাই পার্সোনাল ব্রান্ডিং। এখেত্রে পরিচিত হবার বিকল্প নেই।।আগে নিজেকে পরিচিত করাতে হবে তবেই আমার পন্য পরিচিত পাবে।।পন্যের মাধ্যমে নয় নিজের পরিচিতির মাধমে পন্যকে পরিচিত করাতে হবে।।


Tahshin Bari Shuha

আড্ডা পোস্ট:
পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং:
আমরা সবাই জানি যে, 'প্রচারেই প্রসার'। 
♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️♥️
তবে এমন নীতি আগে মানুষ ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিলেও এখন এ ভাবনা থেকে একটু নড়েচড়ে বসছেন সবাই😐😐। 

🔴পার্সোনাল ব্র্যান্ডিংটা হওয়া দরকার স্মার্ট এবং আধুনিক প্রক্রিয়ায় ।

🔴অসংখ্য প্রতিযোগীর ভিড়ে নিজেকে বা নিজের ব্র্যান্ডকে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে যথাযথ পার্সোনাল ব্র্যান্ডিংয়ের বিকল্প নেই।

♥️পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং করার জন্য উই হলো সবথেকে ভালো প্লাটফর্ম। 

🔴সোসিয়াল নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে আমরা পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং বাড়াতে পারি।

🔴সাধারনত পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং করা হয় নিজের পরিচিতি বাড়ানোর জন্য, নিজের পণ্যের পরিচিতি বাড়ানোর জন্য ।

🔴উদ্যোক্তা হতে হলে আমাদের , ব্র্যান্ডিংয়ের গুরুত্ব বুঝতে হবে ।পার্সোনাল ব্যান্ডিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

✨পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং ডেভেলপ কিছু প্রক্রিয়া রয়েছে। 

🟥প্রতিযোগিতা থেকে সরে আসুন। কারণ ব্যবসার শুরুতেই প্রতিযোগিতা আনতে পারে ভয়ানক বিপর্যয়। 

🟥নিজের সামর্থ্য ও দুর্বলতা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা। সুনির্দিষ্ট দুর্বলতা গুলো দূর করার জন্য কর্মকৌশল নির্ধারণ করা।

🟥নিজের ব্র্যান্ডের নাম সবার কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার অন্যতম কার্যকর পন্থা হলো, মুখে প্রচারের চেয়ে কাজ বা সেবার মাধ্যমে গণমানুষের কাছে পৌঁছান। 

🟥নিজের কাজে স্থির থাকতে শিখতে হবে। কোন একটি সিগনেচার আইটেম নিয়ে কাজ করতে হবে। বারবার বারবার নিজের সিগনেচার পণ্য চেঞ্জ করা যাবে না।

🟥 আমরা কোন কিছু নিয়ে কাজ শুরু করলাম। আমাদের অর্ডার আসলো। কিন্তু আমরা ভালভাবে জিনিসগুলো পৌঁছাতে পারলাম না। এক্ষেত্রে আমাদের পরিবহন ব্যবস্থার দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। 

🟥আপনার একটি কমিউনিটির মধ্যে থাকতে হবে । সেটা হতে পারে কোন গ্রুপ। 

♥️♥️♥️আমরা যারা উদ্যোক্তা আছি আমাদের যেকোন পরিবেশে আমাদের পণ্যের পার্সোনাল ব্যান্ডিং করতে পারি♥️♥️♥️ ।


Jannatul Ferdous Jannat

আড্ডা টপিক:
পর্সোনাল ব্র্যান্ডিং কি এর উপকারিতা কি....

পার্সোনাল ব্র্যাডিং মানে নিজেকে সুন্দরভাবে সবার সামনে নিজেকে পরিচিতি করা।নিজের কাজ, গুনাবলী,অভ্যাস,শখ,ব্যক্তিত্ব বিভিন্ন বিষয় জানানোর মাধ্যমে নিজেকে চিহ্নিত করা বা পরিচিত করা।
এটা কোন শর্টকাট বিষয় না বরং দির্ঘ সময়ের মাধ্যমে সবার সাথে যোগাযোগ ও ভাল সম্পর্ক তৈরি করার মাধ্যমে ই পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং তৈরি করতে হয়।

একজন উদ্যোক্তার জন্য পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং খুব ই গুরুত্বপূর্ণ বলে আমি মনে করি।
মানুষ বিসনেজ বা পণ্যকে চিনে না,মানুষ চিনে পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং যেমন: আমরা জামদানি শাড়ীর কথা শুনলেই কাকলী আপুর কথা বলি কারন আমরা কাকলী আপু বলতেই জামদানী শাড়ী বুজি আর এটা একজন উদ্যোক্তার জন্য বড় ধরনের ব্র্যান্ডিং।

বর্তমান বিশ্ব প্রতিযোগিতার বাজারে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে হলে পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং এর অনেক প্রয়োজন।সুপরিকল্পিত ভাবে পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং এর মাধ্যমে খুব সহজেই একজন ক্রেতার মাথায় বা ক্রেতাকে আকৃষ্ট করা সম্ভব।আর এভাবেই নিজের পরিচিতি বাড়ানো সম্ভব। 
আর তাই পণ্যের ছবির বিজ্ঞাপনের চাইতে নিজের পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং এর গুরুত্ব বেশি আর মাধ্যমে ই নিজের পণ্য ও নিজেকে ব্র্যান্ডিং করা যায়।


আসরাফুননেসা মুক্তি
🌹🌹পার্সোনাল ব্রান্ডিং 🌹🌹

আমাদের বর্তমান সমাজে এখন সবকিছুতেই প্রতিযোগিতা চলছে। আর এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে গিয়ে আমরা অনেক অজানা কিছু সম্পর্কে জানতে পারছি, শিখতে পারছি। তার মধ্যে পার্সোনাল ব্রান্ডিং হচ্ছে অন্যতম।

নিজের নির্দিষ্ট একটি কাজের মাধ্যমে নিজেকে অন্যের কাছে জনপ্রিয় হিসেবে গড়ে তোলার নাম ই হচ্ছে পার্সোনাল ব্রান্ডিং । যেমন আমি কাজ করছি ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী সিল্ক শাড়ী নিয়ে। রাজশাহী সিল্ক শাড়ী সম্পর্কে আমি যা জানি এবং এর A to Z অন্য জনের কাছে তুলে ধরার মাধ্যমে নিজেকে পরিচিত করানোটাই হচ্ছে পার্সোনাল ব্রান্ডিং।

উদাহরণ স্বরূপ আমরা একটু দেখি যে, বাংলাদেশের বিখ্যাত ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি কে। এখানে উপস্থাপক হানিফ সংকেত নিজেকে পরিচিত করেছেন তার ছন্দ ভরা কথার মাধ্যমে। উনি তার কথাগুলো সবসময় ছন্দের মাধ্যমে প্রকাশ করেন। আর এইটাই শ্রোতা ও দর্শকদের আকৃষ্ট করে। এটাই হচ্ছে তার পার্সোনাল ব্রান্ডিং।

এরকম আরো অনেক উদাহরণ আছে আমাদের উই গ্রুপেও। কাকলি আপুর জামদানী হচ্ছে উনার পার্সোনাল ব্রান্ডিং। নিগার আপুর খেস শাড়ী হচ্ছে উনার পার্সোনাল ব্রান্ডিং। আয়েশা হেনা আপুর শীতলপাটি উনার পার্সোনাল ব্রান্ডিং। ফিরোজা জান্নাত আপুর রাজমা ও মণিপুরী শাড়ি উনার পার্সোনাল ব্রান্ডিং ইত্যাদি ইত্যাদি।

বর্তমানে পার্সোনাল ব্রান্ডিং এর গুরুত্ব অপরিসীম।
এটি ছাড়া ব্যবসাতে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়া কঠিন হয়ে যায়, উন্নতি করা সম্ভব হয় না, নিজের পণ্য সম্পর্কে অন্যের কাছে জানানো যায় না। তাই ব্যবসার ক্ষেত্রে পার্সোনাল ব্রান্ডিং টা অত্যন্ত জরুরী। আর হ্যাঁ পার্সোনাল ব্রান্ডিং এ সবসময় একটি সিগনেচার পণ্য থাকতে হবে। যার মাধ্যমে আপনি জনপ্রিয় হবেন।