বিগত শতাব্দীতে সম্পদের যে ধারণা ছিল, একুশ শতকে এসে সেটি পুরোপুরি পাল্টে গেছে। পৃথিবীর সবাইমেনে নিয়েছে যে, একুশ শতকের সম্পদ হচ্ছে জ্ঞান। যার অর্থ কৃষি, খনিজ সম্পদ কিংবা শত্তির উৎস নয়,শিল্প কিংবা বাণিজ্যও নয়- এখন পৃথিবীর সম্পদ হচ্ছে সাধারণ মানুষ ।
তার কারণ শুধু মানুষই জ্ঞান অনুষণকরতে পারে, জ্ঞান ধারণ করতে পারে এবং জ্ঞান ব্যবহার করতে পারে । পৃথিবীর সম্পদের এই নতুন ধারণাটি সারা পৃথিবীতেই মানুষের চিন্তাভাবনার জগতটি পাল্টে দিয়েছে। পৃথিবীর মানুষ এখন একুশ শতকের মুখোমুখি হওয়ার জন্যে আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।
আমরা সবাই অনুভব করতে পারছি একুশ শতকের পৃথিবীটা আসলে জ্ঞানভিত্তিক একটা অর্থনীতির ওপর দীড়াতে শুরু করছে। একুশ শতকে এসে আমরা আরো দুটি বিষয় শুরু করেছি- যার একটি হচ্ছে Globalization, অন্যটি হচ্ছে Internationalization | এই দুটি বিষয় তৃরান্বিত হওয়ার পেছনের কারণটি হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি । যেকোনো দেশের ভৌগোলিক সীমানা বিশ্বায়নের কারণে নিজের দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। ব্যাপারটি বোঝার জন্যে আমরা আমাদের বাংলাদেশের উদাহরণটিই নিতে পারি। আমাদের দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ এখন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে- তারা যে যেখানে আছে সেই অংশটুকুই বাংলাদেশ । এক অর্থে বাংলাদেশের সীমানা ছড়িয়ে গেছে! আবার বাংলাদেশের অধিবাসী হয়েও তারা পৃথিবীর অন্য দেশের নাগরিক হয়ে বেঁচে আছে, আন্তর্জাতিকতা এখন এই নতুন পৃথিবীর অলিখিত নিয়ম।
আমরা জানি, পৃথিবীর মানুষকে এক সময় বেঁচে থাকার জন্যে পুরোপুরি প্রকৃতির অনুকম্পার ওপর নির্ভর করতে হতো। মানুষ বিভিন্ন যন্ত্র আবিষ্কার করে প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে এনেছে। অষ্টাদশ থেকে উনবিংশ শতাব্দীতে শিল্প বিগ্রবের পর মানুষ যন্ত্রের ওপর নির্ভর করে পৃথিবীর অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। পৃথিবীর যে সকল জাতি শিল্প বিপ্লবে অংশ নিয়েছিল, এক সময় তারাই পৃথিবীকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। একুশ শতকে যখন জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির সূচনা হয়েছে, তখন আবার সেই একই ব্যাপার ঘটছে। যারা জ্ঞানভিত্তিক সমাজ তৈরি করার বিপ্বে অংশ নেবে তারাই পৃথিবীর চালিকাশত্তি হিসাবে কাজ করবে ।
এই নতুন বিপ্লবে অংশ নিতে হলে বিশেষ এক ধরনের প্রস্ততি নিতে হবে । যদি আমরা বেঁচে থাকার সুনির্দিষ্ট দক্ষতাগুলো দেখতে চাই সেগুলো হবে পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাব, দক্ষতা, সুনাগরিকতৃ, সমস্যা সমাধানে পারদর্শী, বিশ্রেষণী চিন্তন দক্ষতা (Critical Thinking), সৃজনশীলতা এবং তার সাথে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে পারদর্শিতা ।
সত্যি কথা বলতে, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে পারদর্শিতা সবচেয়ে প্রয়োজনীয় দক্ষতা (Skill) হিসেবে খুব দ্রুত স্থান করে নিচ্ছে। একুশ শতকে টিকে থাকতে হলে সবাইকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুত্তির প্রাথমিক বিষয়গুলো জানতে হবে। এই প্রাথমিক বিষয়গুলো জানা থাকলেই একজন এটি ব্যবহার করে তার বিশাল বৈচিত্র্যের জগতে প্রবেশ করতে পারে। একজন শিক্ষার্থী যতক্ষণ পর্যস্ত এই প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত না হবে_ততক্ষণ পর্যন্ত সে তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, সংযোজন, মূল্যায়ন করে নতুন তথ্য সৃষ্টি করতে পারবে না। এই দক্ষতা অর্জন করতে না পারলে সে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে জ্ঞানভিত্তিক সমাজে স্থান করেনিতে পারবে না।
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEi9WAGzh_6dPQNBf-26vYYrX4jvG65xZQMBxPqEH9ztV_jYgz0EIme5FLwk8Tn4Ehh-p41giO_OpclEIjLCg-5KkUuz7xqUBitwmGQcBWt1sWGmMqCIy8-vXr7DU892TGPGjVcDkaIRhRY/s640/Secondary+-+2018+-+Class+-+9%252610+-+ICT+class-9++PDF+Web+-007.jpg)
No comments:
Post a Comment