ফেসবুক পেজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা

 ফেসবুক পেজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা।


ফেসবুক পেজ হচ্ছে আপনার বিজনেসের ডিজিটাল হোম। আপনার বিজনেস পেজ মানুষকে আপনার ব্যবসা চিনতে সাহায্য করে, আপনার কি কি অফার আছে তা জানতে পারে, কি ধরনের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস দিচ্ছেন তা সম্পর্কে ধারণা দেয়। আপনার সাথে কাস্টমারের এ সংক্রান্ত ব্যাপারে যোগাযোগ করতে পারে।

ফেসবুক পেজ কেমন হতে হবে এটা একজন ডিজিটাল মার্কেটারের জানা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কেমন হতে হবে আপনার পেজ?

১. মানুষের যেন উপকারে আসে এমন করে তথ্যসাজাতে হবে।


২. কি কি নিয়ে কাজ করছেন তা যেন সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়। 


৩. ভ্যালুয়েবল কন্টেন্ট থাকতে হবে। 


৪. সাজানো গোছানো ইনফরমেশন থাকতে হবে।


ফেজবুক পেজ ব্যবস্থাপনায় কিছু দিক বিবেচনায় রাখতে হবে:


১/প্রথমেই পেজের নামটা ইউনিক হতে হবে।

২/পেজের কভার পিক আকর্ষণীয় হতে হবে।

৩/বর্গ আকৃতির প্রফাইল ছবিটাও সুন্দর হতে হবে।

৪/পেজের প্রতিটি পোস্টের ছবি মানসম্মত হতে হবে।

৫/পোস্ট অবশ্যই গঠনমুলক ও পাঠকের মন ছুয়ে যায়,এমন কন্টেন্ট যুক্ত হতে হবে।

৬/পেজের এভাউট সেকসনটা তথ্যবহুল হবে।

৭/নিজের প্রফাইল সিকিউরড তথা এডমিন সেকসন সেফ রাখতে হবে।

৮/পেজ মেন্টেনের জন্য বিশ্বাসযোগ্য কাউকে মডারেটর করা যেতে পারে।


কাস্টমার এনগেজমেন্ট বা ম্যানেজ এর জন্য ফেসবুক পেজ এ বিভিন্ন রকমের ফ্রি ফিচার আছে। আপনি পোস্ট আপডেট দিতে পারবেন, ছবি,  ভিডিও বা লাইভ শেয়ার করতে পারবেন আপনার অডিয়েন্সের কাছে। সরাসরি ম্যাসেজিং এর অপশন ও পাওয়া যাবে

ফেসবুক পেজে যে সুবিধাগুলো পাওয়া যায়

👉 অগণিত বন্ধু রাখা যায় এবং এর ফলে ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব পড়ে না।

👉 পেজটি চালানোর জন্য এডমিন মডারেটর রাখা যায়

👉 সার্চ করার সুবিধা পাওয়া যায়

👉 নিউজ ফিড মার্কেটিং করা যায়

👉 বিজ্ঞাপন দেয়া সুবিধা পাওয়া যায়

👉 মনিটরিং এর সুবিধা পাওয়া যায়

ইত্যাদি

আরেকটি খুব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হচ্ছে, পেইজের কোন পোস্টে কমেন্ট আসলে সুন্দরভাবে এবং সম্ভব হলে সাথে সাথে রিপ্লাই দেয়া। এবং রিপ্লাই এমন হতে হবে যাতে কমেন্টদাতা নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং সম্মানিত ফিল করে অর্থাৎ সে কিনুক বা না কিনুক একটা ভালো এক্সপেরিয়েন্স নিয়ে যায়।  তাহলে এই পেইজের ব্যাপারে তার মনে একটা পজিটিভ ফিলিংস তৈরী হবে এবং এতে করে সে এখন কিনুক আর না কিনুক ভবিষ্যতে কেনার সম্ভাবনা অনেক বেশী থাকে। আবার সে অন্যদেরকেও পেইজ সম্পর্কে ইনফরমেশন দিবে এবং তাতে করে পেইজে ভিউয়ার বাড়বে আবার সেলও বাড়তে পারে


পেজ ক্রিয়েট করার সময় ফেসবুক যেসব ইনফরমেশন চাইবে তা শুরুতেই যথাসম্ভব পূরন করে নেয়া উত্তম। বিশেষত ফোন নাম্বার, ইমেইল এবং এড্রেস যেন আপনার সঠিক হয় সেটা লক্ষ্য রাখা উচিত।

1.আপনি কিন্তু আপনার পেজের মাধ্যমে টার্গেট 2.কাস্টমার চিহ্নিত করতে পারবেন। ক্রেতা কি চায় সেটা আপনি প্রকাশ করতে পারবেন। 

3.একটা সুন্দর লোগো দরকার।

4.পেজে ডোমেইন-হোষ্টিং থাকা দরকার।

5.সুন্দর কনসেপ্টে লেখা দরকার।

6.কন্টেন্ট ঠিক রাখা দরকার

.আনরিড আনসিন মেসেজগুলো সিন করার দরকার

স্প্যামবক্সে অনেক মেসেজ জমে যায় যেগুলো কিনা পেজে আসেনা সেগুলো নিয়মিত চেক করা দরকার।

7.পণ্যের উপর ফোকাস করে পণ্য সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমাণে লেখা দরকার।

8.রিকমেন্ডেশন থাকা দরকার পেজে এর মাধ্যমে ক্রেতাদের আস্থা আপনি অর্জন করতে পারবেন।

9.আপনার সার্ভিস কেমন আপনার প্রোডাক্ট সবকিছু আপনার পেজ উল্লেখ করতে হবে।

10.টার্গেট কাস্টমার বের করতে পারবেন আপনি আপনার পেইজের মাধ্যমে।


6 মাস পরপর আপনার পণ্যকে নতুন ভাবে উপস্থাপনা করা দরকার এতে ক্রেতা আকৃষ্ট হয়।

এইবার যদি ফেসবুকের পাসওয়ার্ডে টু ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন চালু করা থাকে আপনার ফেসবুক নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারবেন। 

**পুরো প্রসেসটা একান্ত গোপনীয়ভাবে সম্পন্ন করবেন।

ফেসবুক পেইজে মেম্বার/লাইক  বাড়ানোর জন্য আপনি একচেটিয়া সবাইকে ইনভাইট করা শুরু করলেন এটা কখনোই আপনার জন্য ফলপ্রসূ হবে না। আপনার টার্গেটেড কাস্টমার পর্যন্ত আপনাকে পৌঁছাতে হবে। সবাই নিঃসন্দেহে আপনার ক্রেতা শ্রেনীর অন্তর্ভুক্ত নয়। তাহলে কিভাবে বুঝবেন কারা আপনার জন্য টার্গেটেড কাস্টমার? 


এটা বুঝার জন্য আপনাকে নিয়মিত আপনার পেইজে পোস্ট করে যেতে হবে, যেগুলো আপনার বিজনেস প্রোডাক্টের বর্ননা করবে এবং নানাবিধ প্রয়োজনীয় দিক তুলে ধরবে। এতে করে যাদের প্রয়োজন তারা নিজেই আপনাকে খুঁজে নিবে।


📌 টেলিভিশন, রেডিও, সংবাদপত্র, বিভিন্ন সাইজের ব্যানার, ফেসটুন, লিফলেট,  ইত্যাদির মাধ্যমে পন্য প্রচার হলো ট্রাডিশনাল মার্কেটিং। অন্যদিকে ই কমার্স বিজনেসে পণ্যের বিজ্ঞাপন যেমন- ফেসবুক, ইউটিউব, ইনষ্টাগ্রাম সহ বিভিন্ন সোশাল মিডিয়া ও জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে কাস্টমারের কাছে পন্যের প্রচারনাকে ই কমার্স বিজনেস বলে ।


📌 ট্রাডিশনাল বিজনেসে  এ টাকার  পরিমান অনেক বেশী লাগে। ট্রাডিশনাল বিজনেসে দোকানের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা, কর্মী, বিভিন্ন ধরনের ডেকোরেশনের জন্য সরঞ্জাম লাগে। বিভিন্ন লাইটিং এর জন্য মোটা অংকের ইলেকট্রিসিটি বিল দিতে হয়।পন্যের পরিমানও অনেক লাগে।ক্রেতা অনেচ গুলো দেখে সিদ্ধান্ত নেন। এছাড়াও অনেক কথা বলতে হয়। পক্ষান্তরে  ই কমার্স বিজনেসে টাকার পরিমান তুলনামূলক অনেক কম লাগে।


 📌ট্রাডিশনাল বিজনেসের  মাধ্যমে বিজ্ঞাপনের এর ফলাফল হিসেবে এর কোন পরিপূর্ণ ডাটা পাওয়া যায় না। যা কিনা ই কমার্স বিজনেসে  ক্ষেত্রে এ সকল ডাটা পাওয়া সম্ভব।


📌 ট্রাডিশনাল বিজনেস এর দ্বারা টার্গেটেড কাস্টমারের কাছে বিজ্ঞাপন প্রচার সম্ভব হয় না।নির্দিষ্ট এরিয়ার মানুষজন শুধু কিনতে পারে। কিন্তু  ই কমার্স বিজনেসের মাধ্যমে টার্গেটেড কাস্টমারের নিকট বিজ্ঞাপন প্রচার সম্ভব।ঘরে বসেই বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে অনেক সংখ্যক কাষ্টমার সৃষ্টি করা যায়।

 

📌ট্র্যাডিশনাল বিজনেসে নির্দিষ্ট সময়ে যেতে হয় এর বাহিরে কাজ করার সুযোগ থাকে না।আর ই কমার্স বিজনেসে ২৪ ঘন্টা কাজ করা যায় ঘরে বসেই। one man army হিসেবে কাজ করতে হয়।


📌ট্রাডিশনাল বিজনেসে প্রোডাক্ট মার্কেটিংশুধু একটা এরিয়াতে হয় আর ক ই কমার্স বিজনেসে প্রোডাক্টখুবসহজেই রিচ হয়।


🍀কোন উদ্যোক্তা হতে চাইলে সহজেই  ই-কমার্স বিজিনেসের মাধ্যমে পন্য প্রচার  করা যায়। যা বিজনেস প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।


 🍀আবার ট্রাডিশনাল বিজনেসের তুলনায় ই কমার্স বিজনেসে  সহজেই   টারগেটেড কাস্টমারদের কাছে নির্ধারিত পন্য বা সেবার প্রচার প্রচারনা করা যায়।


🍀মূলত ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে দিন দিন ট্রাডিশনাল বিজনেস এর চেয়ে ইকমার্স বিজনেস অনেক  বেশি কার্যকরী হয়ে উঠছে।


No comments:

Post a Comment