দেশী পণ্যের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির কন্টেন্ট নিয়ে আলোচনা

দেশী পণ্যের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির কন্টেন্ট নিয়ে আলোচনা করেন। 


কনটেন্ট মানে হলো বিষয়বস্তু । দেশী পন্যের ই কমার্স কনটেন্ট বা বিষয়বস্তু হলো এমন কিছু মাধ্যম যা দিয়ে কোনো আমরা আমাদের ই কমার্স সেক্টরে নিজের উদ্যেগকে  প্রকাশ করেছি বা করছি। কোনো কিছুর অবস্থা হতে পারে কোনো ছবি ও শব্দও হতে পারে । এগুলো সরাসরি প্রকাশ করা যায় আবার সংরক্ষিত রেখে সরবরাহ ও বিতরণ করা যায় ।

কেমন হতে পারে আপনার উদ্যেগের  কন্টেন্ট??


১/পন‍্যের পরিচিতি 

২/ গুনাগুন 

৩/ উৎপত্তি

৪/ ব‍্যবহার

৫/ রক্ষনাবেক্ষন

৬/পন্যের বন্টন প্রনালী

৭/বিপনন কৌশল

৮/স্টোরি টেলিং এর মাধ্যমে পন্যকে উপাস্থাপন

৯/পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং ও হতে পারে কন্টেন্ট


উপরোক্ত বিষয় গুলো  থাকতে পারে আপনার পন্যের কন্টেন্টে।

ঐতিহ্যবাহী ও সংস্কৃতিক বাংলাদেশ আমাদের এখানে অনেক ব্যবসায়িক সামগ্রী গুলো রয়েছে যা দিয়ে আমরা সহজে ই-কমার্স এর মাধ্যমে বাংলাদেশের একটি বিরাট বাণিজ্যিক প্রসার ঘটাতে পারি ও বড় একটি মার্কেট প্লেস তৈরি করতে পারি দেশ ও দেশের বাইরে। এবং এর মাধ্যমে অনেক বেকারত্বের হার কমিয়ে আত্মকর্মসংস্থান বাড়িয়ে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ঘটাতে পারি

ডিজিটাল মাধ্যমে প্রকাশিত যেকোনাে তথ্য, ছবি, শব্দ কিংবা উভয়ই ডিজিটাল কনটেন্ট। কাজেই নানাভাবে ডিজিটাল কনটেন্টকে ভাগ করা যায়। তবে, ডিজিটাল কনটেন্টকে প্রধান চারটি ভাগে ভাগ করা যায়।

১/টেক্সট অথবা লিখিত কনটেন্ট

২/ ছবি। 

৩/শব্দ বা অডিও। 

৪/ ভিডিও এবং এনিমেশন।

বাংলাদেশের যেহেতু অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা যদি একটু উদাহরণ হিসেবে  ই ক্যাব কথা চিন্তা করি তাহলে আরও সহজ হয়ে যাবে বিষয়টি, যেমন ই ক্যাব এর মাধ্যমে এখন ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির অনেকগুলো সম্ভাবনাময় দ্বার খুলে গিয়েছে,  যেমন ভাবে ই ক্যাব  দেশের পণ্য নিয়ে কাজ করে সবার দ্বারে দ্বারে পৌছে দেয়ার প্রচেষ্টা করছে

বিল গেটস বলেছিল কন্টেন্ট রাইটিং ইজ কিং,

কন্টেন্ট দ্বারা একটা পন্যকে খুব সহজেই উপস্থাপন করা যায়।

তা বিভিন্ন মাধ্যমে হতে পারে।

লিখা,ছবি দিয়ে,পডকাস্টিং করে বিভিন্নভাবেই কন্টেন্ট ক্রিয়েট করা যায়।


শাহজাদপুর হাটঃ সিরাজগঞ্জের একটি বড় হাট শাহজাদপুর হাট। এ হাটে মূলত পাইকারি বিক্রি হয় তাঁতের শাড়ি, লুঙ্গি, গামছা, থ্রি-পিস, রং ও সুতা। সপ্তাহে চার দিন হাট বসে—শনি, রবি, মঙ্গল ও বুধবার

পাঠক যেন বোর ফিল না করে সে কারণে কন্টেন্ট এর সাইজ এর উপর আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। নরমালি ৫০০ বা ১০০০ শব্দের মাঝে হলে তা পড়তে বিরক্ত আসেনা। তবে হ্যা ছোট ও হতে পারে তবে তা এমন হবে যেন পাঠক বা ক্রেতা, যাদের টার্গেট করে লেখা তাদের মন ছুয়ে যায়।


প্রতিটি জেলায় এমন কিছু পন্য রয়েছে যা সেসব জেলাকে ব্রান্ডিং করে,ই কমার্স ব্যবহার করে ভালো কন্টেন্ট রাইটিং এর মাধ্যমে সেগুলাকে সারাদেশের কাছেই পরিচিত করা গেছে।


এখন যেহেতু অনেক উদ্যোক্তা স্যারের গাইডলাইন ফলো করে কাজ করছে, এখন প্রচুর তথ্যবহুল কন্টেন্ট এভেলেবল হবে অনলাইনে ইনশাল্লাহ।  যা সবসময় সবার কাজে লাগবে। একসময় ইউনিভার্সিটিতে কোর্স চালু হলে এই কন্টেন্টগুলো অনেক বেশী গুরুত্ব পাবে। আমরা যেমন ইউনিভার্সিটিতে এসাইনমেন্ট করার সময় একটা টপিকের উপর প্রচুর সার্চ করতাম তেমনি যখন ইউনিভার্সিটিগুলোতে ই কমার্সের কোর্স চালু হবে তখন আমাদের আপুদের বিভিন্ন প্রোডাক্ট রিলেটেড কন্টেন্টগুলো সার্চ করে পড়বে স্টুডেন্টরা।


বাজিতপুর হাটঃ আদি টাইংগাইলের বাজিতপুর বটতলায় শুক্র ও সোমবার বসে বাজিতপুর শাড়ির হাট। ভোরে শুরু হয়ে সকাল নয়টা থেকে সাড়ে নয়টার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। এই হাটের মূল পণ্য তাঁতের শাড়ি। বাজিতপুর হাটে মূলত টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি বিক্রি হয়। এছাড়া শাড়ি তৈরির সুতা, তাঁতের বিভিন্ন উপকরণও বিক্রি হয়।


রাঙ্গামাটির শালগুলো বিভিন্ন আদিবাসী জাতিসত্তা দ্বারা তৈরি হওয়ায়  এর বুননশৈলি ও সৌন্দর্যে আছে ঐতিহ্যের ছোঁয়া।

টেক্সটাইল খাতে উন্নয়নের সাথে সাথে তাঁত শিল্প হারাতে বসেছিল। ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে উদ্যোক্তারা মেশিনে তৈরি কাপড় ও তাঁতিদের হাতে তৈরি কাপড় এরমধ্যে পার্থক্য তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন ফলে তাঁত কাপড়ের চাহিদা আবার বাড়ছে। এতে করে তাঁত শিল্পে ফিরে আসতে শুরু করেছে সুদিন।

উইতে আমরা কি করি কনটেন্ট লিখি। সাথে পণ্যের ছবি দেই।  উইতে সেল পোস্ট এলাউ না।  তারপর ও উইতে লাখপতি উদ্যোক্তার অভাব নাই। সবার ই নির্দিষ্ট ক্রেতা আছে। কারণ উইতে আমাদের পারসোনাল ব্র‍্যান্ডিং এর উপর জোর দেওয়া হয়। আর পারসোনাল ব্র‍্যান্ডিং হয় কনটেন্ট এর কারণে।  যার কনটেন্ট যতো ভালো তার পরিচিতি ততই বেশি।  আর যার পরিচিতি বেশি তার বিক্রিও বেশি।  কারণ আমরা তার থেকেই কিনি, যাকে আমরা চিনি। আর এই চেনা বা চেনানোর মাধ্যম ই কনটেন্ট।

আজকের লাস্ট কমেন্ট করবো একটু লম্বা হবে। দেখেন ভাল কনটেন্ট লিখার জন্য আপনাকে রবীন্দ্রনাথ শেক্সপিয়ার, হুমায়ূন আহমেদ নজরুল আনিসুল হক  হতে হবে না। দেখেন একজন মানুষ যে ভাষায় কনটেন্ট লিখবে সেই ভাষার ব্যাকরণ টা খুবই ভাল করে  জানতে হবে। সে জানে কোথায় কোন সমাসের ব্যবহার কোন কারক কোন প্রত্যয় যোগ করে কিভাবে একটি ভাষাকে কত মোহনীয় করে তুলতে হবে কিন্তু তার রবীন্দ্রনাথের মত একটি বই নেই, হুমায়ূন আহমেদের মত একটি ভালো উপন্যাস নেই। তার মানে এই না যে সে একটি ভাল কনটেন্ট লিখতে পারবে না। সে কিন্তু জানে কোন শব্দ টা লাইনের কোথায় বসলে ওই লাইনটা আসলে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠবে কোন লাইন এর পরে কোন লাইনটা ডেলিভারি দেয়া উচিত এ বিষয়ে তার ব্যাপক জ্ঞান আছে এটুকুই যথেষ্ট তার জন্য বলছি না। কিন্তু এই টুকু থাকলে সে মোটামুটি একটি কনটেন্ট লেখার জন্য বিবেচনা করা যেতে পারে। তাই কনটেন্ট লেখার ক্ষেত্রে আমি মনে করি প্রথম ভাষার অগাধ জ্ঞান থাকতে হবে। দেখেন প্রাক্টিক্যালি একটা সাবজেক্ট সম্পর্কে মানুষকে বোঝানো এবং থিওরিটিক্যাল কনটেন্ট এর মাধ্যমে একটা সাবজেক্টকে মানুষকে বোঝানো সেটা ভিন্ন ব্যাপার। তাই কনটেন্ট লেখার ক্ষেত্রে ভাষার সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান  হচ্ছে অন্যতম একটি গুণ।

করোটিয়া বাজারঃ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শাড়ি কাপড় বিক্রির হাট টাঙ্গাইলের করোটিয়ার।এই হাট টাঙ্গাইল তাঁতের শাড়ীর জন্য প্রসিদ্ধ। এই হাটকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলের দক্ষ কারিগররা দীর্ঘকাল ধরে বিভিন্ন প্রকারের পোশাক প্রস্তুত করে আসছে। প্রতি মঙ্গলবার বিকেল থেকে বুধবার বিকাল পর্যন্ত এখানে হাট বসে।


দেশের বাজারে লনের কাপড়ের এই বিশাল চাহিদার প্রেক্ষিতে দেশিয় নিটিং ফ্যাক্টরিগুলো আধুনিক টেকনলোজি ও উন্নত সুতা ব্যাবহার করে লন ফ্যাব্রিক উৎপাদনের কাজ শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় প্রিন্টিং কোয়ালিটির উপর ও গুরুত্ব দিয়ে আমদানি করা হয় ডিজিটাল টেক্সটাইল প্রিন্টিং ম্যাশিন, যার ফলে আমরা পাচ্ছি আমাদের বর্তমান ট্রেন্ড ডিজিটাল প্রিন্টেড কটন লন। বাংলাদেশের তৈরি লনের কাপড় পাকিস্তানি লনের তুলনায় একটু কম পাতলা হয়। এতে ১০০% কটন সুতা ইউজ করা হয়।


বেশ কয়েক বছর আগে বাংলাদেশের কাপড়ের বাজারে পাকিস্তানি লনের একচেটিয়া আধিপাত্য ছিল, আর সেসব লনের মূল্য ও ছিলো ক্রেতাদের হাতের নাগালে। আনুমানিক ২০১৫ সাল থেকে পাকিস্তান থেকে আমদানিকৃত কাপড়ের উপর আমদানি শুল্ক সর্বাধিক করায় রাতারাতি পাকিস্তানি লনের মুল্য প্রায় দ্বিগুন বৃদ্ধি পায়।


বাবুরহাটঃ বাবুরহাট  বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ কাপড়ের বাজার। এটি নরসিংদী জেলার সদর থানায় শেখেরচরে অবস্থিত। এ অঞ্চলটি বহুকাল থেকেই তাঁত বস্ত্রের জন্য প্রসিদ্ধ। এক সময় কেবল রবিবারে হাট বসত। এখন সপ্তাহে তিনদিন অর্থাৎ শনি, রবি ও সোমবার হাট বসে


সোহাগপুর হাটঃ  সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সোহাগপুর হাট প্রায় প্রায় ৬৫ বছরের পুরোনো। হাটটি বর্তমানে সোম, মঙ্গল ও বুধবারে বসে। সোম ও মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার বয়নশিল্পীদের তৈরি শাড়ি, লুঙ্গি ও গামছা বিক্রি হয়। বুধবার সুতা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি হয়।

ইন্টারনেট দুনিয়ার প্রাণই বলা যায় কনটেন্ট। কনটেন্ট ছাড়া কোন ওয়েবসাইটের ভ্যালু নাই। কনটেন্ট না থাকলেও তেমন ইউজার ইন্টারনেটে আসার প্রয়োজন মনে করতো না। দেশি পণ্যের ক্ষেত্রেও অনুরুপ। 


দিন দিন দেশি পণ্যের যত কনটেন্ট বৃদ্ধি পাচ্ছে তত প্রচার ও বিক্রি বেড়ে যাচ্ছে। নতুন নতুন উইজার এনে দেয় কনটেন্ট। আমরা যখন কোন কনটেন্ট কোন ওয়েবসাইটে পাবলিশ করি এবং অপরিচিত কোন ইউজার রিলেটেড কিওয়ার্ড সার্চ করে তাহলে সে পেয়ে যায় পণ্য গুলো। তাই ইন্টারনেটে যত বেশি কনটেন্ট আপলোড হবে তত বেশি ইউজার বাড়বে, প্রচার বাড়বে। আমরা সাধারণত আর্টিকেল, ছবি, ভিডিও ব্যবহার করি। তাছাড়াও পিডিএফ, পডকাস্ট ইত্যাদি রয়েছে।


দেশি পণ্যের প্রসারে কনটেন্টের বিকল্প নাই।



No comments:

Post a Comment